খবরের বিস্তারিত...


শাহ্সুফী আলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ শফিউল বশর মাইজভান্ডারীর (কঃ) এর জীবনী

সৈয়দ শফিউল বশর মাইজভান্ডারী ছিলেন মাইজভান্ডারী সুফি তরিকার প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখা ব্যক্তিগণের মধ্যে দ্বিতীয় প্রজন্মের সুফি সাধক। তার অনুসারীগণ বিভিন্ন প্রচার- প্রকাশনায় তার নাম হযরত মৌলানা সুফি সৈয়দ শফিউল বশর শাহ মাইজভান্ডারী কাদ্দাছা ছিরহুল আজিজ/ (কঃ) লিখতে দেখা যায়। এর পাশাপাশি শফিউল বশর মাইজভান্ডারী এবং শফি বাবা উপনামেও সুফি সমাজে রয়েছে তার বহুল পরিচিতি।

জন্ম

তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি মাইজভান্ডারে জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৯ খৃষ্টাব্ধের ২০ ফেব্রুয়ারী, ১৩২৫ বঙ্গাব্ধ ৭ ফাল্গুন রবিবার। তার পিতা সৈয়দ গোলামুর রহমান মাইজভান্ডারীর জীবদ্দশায় অত্র তরিকাটি ব্যাপক প্রচার- প্রসার লাভ করে। তিনি পিতা ও মাতা সৈয়দা জেবুন্নেছা বেগমের [৩] কনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন।

শিক্ষা

গ্রামীণ মক্তবে শুরু হয় তার প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ। পরে তাকে ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে। তিনি ধর্মগ্রন্থ, হাদীস শরীফ ইত্যাদিও অধ্যয়ন করেন। ভারতের আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ১৯৩২ সনে। শিক্ষা সমাপনান্তে তিনি নিজ গ্রাম মাইজভান্ডার শরীফে প্রত্যাবর্তন করেন এবং শিষ্য রুপে স্বীয় পিতার নিকট হতে আধ্যাত্ম জ্ঞান সাধানায় আত্মনিয়োগ করেন।

সংসার

১৯৩৭ খৃষ্টাব্ধের ৫ই এপ্রিল, ১৩৪৩ বাং ২২ চৈত্র তার পিতা গোলামুর রহমান মাইজভান্ডারী পরলোকগত হন। [৬] এর ছয়মাস পর সৈয়দ শফিউল বশর মাইজভান্ডারী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সৈয়দা আশরাফুন্নেসার [৩] সাথে। তিনি পাঁচ পুত্র ও ছয় কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। তার পুত্রগণের নাম যথাক্রমে: সৈয়দ হাবিবুল বশর, সৈয়দ মুহিবুল বশর, সৈয়দ নজিবুল বশর,সৈয়দ মুজিবুল বশর,সৈয়দ আমিনুল বশর [৭][৮][৯] সৈয়দ মুজিবুল বশর,[১০] সৈয়দ করিমুল বশর।

বার্মায় গমন

১০ জানুয়ারি ১৯৩৯ খৃষ্টাব্ধে তিনি স্টীমার যোগে এবং ১৯৪৬ খৃষ্টাব্ধে উড়ো জাহাজযোগে বার্মা সফর করেন। প্রথম সফর কালে অনেক আশেক-ভক্তের সমাগম ঘটে। সেখোনে তিনি গোলামুর রহমান মাইজভান্ডারীর এর ওরশ উদযাপন করেন। এতে বহু মানুষ তার নিকট সুফি তরিকায় বায়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের বাইরে মাইজভা্ন্ডারি তরিকার প্রচার ও প্রসার তিনিই সর্বপ্রথম শুরু করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগদান

২য় বিশ্ব যুদ্ধে যোগদানের ফলে তিনি পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত বিভিন্ন নবী-ওলীগনের স্মৃতি বিজড়িত স্থান পরিদর্শন করার সুযোগ লাভ করেন। অতপর তিনি পুনরায় মাইজভান্ডার শরীফে প্রত্যাবর্তন করেন।

অব্যাহত সফর ও শিষ্যত্ব

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে সফর অব্যাহত রাখেন। এ সকল সফরকালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ মানুষ তার নিকট শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। সুফি ভাবধারায় তার অবদানে মাইজভান্ডার শরীফে নতুন ভাবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সুফি ভক্ত-অনুরক্তগণের ব্যাপক সমাগম লক্ষ্য করা যায়।

পরলোকগমন

সৈয়দ শফিউল বশর মাইজভান্ডারী তিরাশি বৎসর বয়সে ইহকাল ত্যাগ করেন। নিজ গ্রাম মাইজভান্ডার শরীফে তার সমাধিকে ঘিরে মাজার প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে প্রতি বছর ৭ ফাল্গুন তার খোশরোজ শরিফ (জন্মদিন) উপলক্ষে ব্যাপক আশেক-ভক্তের সমাগম ঘটে।

(সংগৃহীত)

Comments

comments